বাংলাদেশের বিভিন্ন গ্রামে সম্প্রতি গরু চুরির ঘটনা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। রাতের অন্ধকারে সংঘবদ্ধ চক্র প্রবেশ করে একাধিক গরু চুরি করে পালিয়ে যাচ্ছে। এতে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন গ্রামের সাধারণ কৃষকরা—যাদের জীবিকা ও সম্পদের বড় অংশই নির্ভর করে এই গবাদি পশুর ওপর।
এক রাতেই তিনটি গরু উধাও!
ময়মনসিংহ, কুড়িগ্রাম, যশোর, ও নাটোর জেলার বিভিন্ন গ্রামে এক রাতেই তিন থেকে পাঁচটি গরু চুরির ঘটনা ঘটছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ—
- চোরেরা চেতনানাশক স্প্রে বা মাদক খাইয়ে গরু অচেতন করে নিয়ে যাচ্ছে।
- তারা মোটরসাইকেল বা ভ্যানে করে দ্রুত পালিয়ে যাচ্ছে।
- প্রহরীর অভাব ও রাস্তার অন্ধকার চুরির জন্য সহায়ক হয়ে উঠেছে।
চুরির পেছনে সংগঠিত চক্র?
পুলিশ জানিয়েছে, গরু চুরির পেছনে রয়েছে সংগঠিত আন্তঃজেলা চক্র, যারা গরু চুরি করে
➡ পার্শ্ববর্তী হাটে বিক্রি করে দেয়
➡ অথবা সীমান্তবর্তী এলাকায় পাচার করে ফেলে
তাদের মধ্যে অনেকে আবার স্থানীয়দের কাছ থেকেই গোপনে তথ্য সংগ্রহ করে।
কৃষকদের ক্ষতির চিত্র
🔹 এক কৃষকের ভাষ্যে: “এই গরুটা ছিল আমার রোজগারের একমাত্র ভরসা, এখন কীভাবে চলব?”
🔹 অনেকেই বাধ্য হয়ে ঋণ নিচ্ছেন গরু কেনার জন্য
🔹 গরুর দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, কিন্তু নিরাপত্তা নেই বলে কেউ গরু পালতে আগ্রহী হচ্ছেন না
গ্রামে গ্রামে পাহারার উদ্যোগ
কিছু এলাকায় গ্রামবাসীরা নিজেরাই
✅ রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন
✅ বাড়িতে সিসি ক্যামেরা ও অ্যালার্ম সিস্টেম বসাচ্ছেন
✅ রাস্তার পাশে বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে চোর ধরার চেষ্টা করছেন
প্রশাসনের করণীয় কী?
✔️ নিয়মিত টহল জোরদার
✔️ সন্দেহভাজনদের উপর নজরদারি
✔️ স্থানীয়দের সাথে সমন্বয় করে কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থা চালু
✔️ হাট-বাজারে চোরাই গরুর সনাক্তকরণে বিশেষ দল গঠন
উপসংহার
গ্রামবাংলার কৃষকদের জীবনের সঙ্গে গরু চুরি এখন একটি বড় সংকট। শুধু সম্পদ নয়, এটি তাদের মানসিক শান্তি ও নিরাপত্তার অনুভূতিকেও কেড়ে নিচ্ছে। চোর চক্র ধরতে হলে প্রশাসন, স্থানীয় সরকার ও জনগণের সমন্বিত উদ্যোগ জরুরি।
“গরু শুধু সম্পদ নয়, কৃষকের আশ্রয়, স্বপ্ন আর জীবনের অবলম্বন।”